বাংলা ভাষার সমস্ত লেখক - এক জায়গায় ক্রমানুসারে
অখিলবন্ধু নিয়োগী
জন্ম - ২৫শে অক্টোবর, ১৯০২ মৃত্যু - ২১শে ফেব্রুয়ারী, ১৯৯৩
টাঙ্গাইল, বাংলাদেশ কলকাতা, ভারত
অখিলবন্ধু নিয়োগী
জন্ম - ২৫শে অক্টোবর, ১৯০২ মৃত্যু - ২১শে ফেব্রুয়ারী, ১৯৯৩
টাঙ্গাইল, বাংলাদেশ কলকাতা, ভারত
ছদ্মনাম - স্বপন বুড়ো
বাংলা সাহিত্যে শিশুসাহিত্যিক হিসাবে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়ে আছেন অখিলবন্ধু নিয়োগী, বাংলার পাঠকমহলে যিনি "স্বপনবুড়ো" নামে অধিক পরিচিত । অখিলবন্ধু নিয়োগী 1945 সাল থেকে দৈনিক "যুগান্তর" পত্রিকায় "ছোটদের পাততাড়ি" বিভাগ পরিচালনা করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন । অখিলবন্ধু নিয়োগী "স্বপনবুড়ো" নামে ছোটদের জন্য সঙ্গীত রচনা করতেন এবং পরবর্তীকালে তিনি এই নামেই পরিচিতি লাভ করেন । অখিলবন্ধু নিয়োগী 1902 সালে অক্টোবরের 25 তারিখে অধুনা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ বিভাগের টাঙ্গাইল জেলার সাঁকরাইল গ্রামে ভুমিষ্ঠ হলেও বর্তমান ভারতবর্ষের অন্তর্গত পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের রাজধানী কলকাতায় বিদ্যাশিক্ষা করেন । এই শ্রদ্ধেয় শিশুসাহিত্যিকের পিতার নাম গোবিন্দচন্দ্র নিয়োগী, ইনি পেশায় টাঙ্গাইল জেলার অন্তর্ভুক্ত বিন্দুবাসিনী হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন এবং মাতার নাম ভবতারিণী দেবী । এই মান্যবর শিশুসাহিত্যিক কলকাতা শহরে অবস্থিত স্কটিশচার্চ কলজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, সিটি কলেজ থেকে আই. এসসি. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি আর্ট কলেজে ভর্তি হন এবং আর্ট কলেজ থেকে পাস করে কর্মাশিয়াল আর্টিস্ট হিসাবে নিজের কর্মজীবন আরম্ভ করেন । আর্ট কলেজে ছাত্র থাকাকালীন এই পূজনীয় শিশুসাহিত্যিক "আর্টিস্ট ওয়েলফেয়ার সোসাইটি" প্রতিষ্ঠা ও সম্পাদনা করেন । এই সম্মাননীয় শিশুসাহিত্যিক বাংলা ছায়াছবির জগতে অঙ্কনশিল্পী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং পরে তিনি গীতিকার, চিত্রনাট্যকার, নির্দেশক ও অভিনেতার ভুমিকায় নিজের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবদ্দশায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রযোজনায় শ্রীনিকেতনের উপর যে তথ্যচিত্র তৈরী হয়, সেই তথ্যচিত্রের চিত্রনাট্যকার ছিলেন এই খ্যাতনামা শিশুসাহিত্যিক এবং তিনি "মুক্তির বন্ধনে" ছায়াছবিটির পরিচালকও ছিলেন । "ছোটদের পাততাড়ি" বিভাগ জনপ্রিয় হওয়ার সুবাদে এই আদরণীয় শিশুসাহিত্যিক 1957 সালে শিশুদের শারীরিক , সংস্কৃতিমান ও সুন্দরভাবে মানসিক বিকাশের জন্য "সব পেয়েছির আসর" নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করেন এবং 2003-2004 সালে এই "সব পেয়েছির আসর" জাতীয় পুরস্কারের সম্মান লাভ করে । 1929 সালে এই জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক ক্ষিতীশচন্দ্র ভট্টাচার্যের সহযোগিতায় শিশুদের জন্য পত্রিকা "মাসপয়লা" সম্পাদনা করেন । বাংলা সাহিত্যজগতে উপন্যাস রচনা করে আত্মপ্রকাশ করেন এই বরণীয় শিশুসাহিত্যিক এবং আর্ট কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় "শিশুসাথী" পত্রিকায় তার রচিত উপন্যাস "বেপরোয়া" ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে থাকে । এই প্রথিতযশা শিশুসাহিত্যিক প্রচুর গ্রন্থ রচনা করেছেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল - বেপরোয়া (1928), ভূতের গল্প (1931), রূপকথা (1933), অ্যাডভেঞ্চার (1951), বাবুইবাসা বোডিং, বনপলাশীর ক্ষুদে ডাকাত, বাস্তুহারা, সাত সমুদ্র তেরো নদীর পাড়ে, পঙ্ক থেকে পদ্ম জাগে, ধন্যি ছেলে, কিশোর অভিযান, ভুতুরে দেশ, খেলার সাথী প্রভৃতি । এই স্বনামধন্য শিশুসাহিত্যিক 1952 সালে আন্তর্জাতিক শিশুরক্ষা সমিতির আমন্ত্রণে ভিয়েনা গমন করেন এবং ভিয়েনা থেকে প্রত্যাবর্তন করে তিনি "সাত সমুদ্র তেরো নদীর পাড়ে" নামে যে গ্রন্থটি রচনা করেন তাতেই সর্বপ্রথম নেতাজির স্ত্রী ও কন্যার কথা জানা যায় । 1993 সালে ফেব্রুয়ারি মাসের 21 তারিখে এই মহামান্য শিশুসাহিত্যিকের তিরোধান হয় ।
No comments:
Post a Comment