বিশেষ ঘোষণা

বিশেষ ঘোষণাঃ কারিগরি কারণ বশতঃ বেশ কিছু বইয়ের লিঙ্ক কাজ করছে না। সেগুলো ধীরে ধীরে ঠিক করে দেওয়ার কাজ চলছে। কিছু বই অপেক্ষাকৃত ভালো করতে গিয়ে একটু সময় লাগছে। ফেসবুক গ্রুপে প্রত্যেক আপডেট জানিয়ে দেওয়া হবে। মাঝে মাঝে নতুন বই দেবার ও চেষ্ট চলছে ।

বিমল মিত্র

বাংলা ভাষার সমস্ত লেখক - এক জায়গায় ক্রমানুসারে

বিমল মিত্র
জন্ম - ১৮ই মার্চ, ১৯১২                                                                           মৃত্যু - ২রা ডিসেম্বর, ১৯৯১
কলকাতা, ভারত                                                                                                        কলকাতা, ভারত

অমর কথাশিল্পী শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পর ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশে বাঙালী সাহিত্যিকদের মধ্যে জনপ্রিয়তার নিরিখে আজও শীর্ষস্থান দখল করে আছেন বিমল মিত্র । মানুষ হিসাবে বিমল মিত্র ছিলেন নিরহংকারী, পরোপকারী এবং অত্যধিক সাহসী । অহংকারশূন্য ছিলেন বলে মানুষের সাথে সহজেই মিশতে পারতেন এবং খ্যাতির চুড়ায় উঠেও লেখালিখির শত ব্যস্ততার মধ্যেও কোন দর্শন প্রার্থীকে কখনো বিমুখ করেন নি বিমল মিত্র । তার সংস্পর্শে এসে কত সাহিত্যপ্রেমী যে উপকৃত হয়েছেন তা বলে বা লিখে শেষ করা যাবে না । বিমল মিত্র ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও পত্রিকা-সম্পাদক । 

এই নিরহংকারী কথাসাহিত্যিক 1912 সালের মার্চ মাসের 18 তারিখে বর্তমান ভারতবর্ষের অন্তর্গত পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের রাজধানী কলকাতা শহরে ভুমিষ্ঠ হন । এই শ্রদ্ধেয় কথাসাহিত্যিকের পিতার নাম সতীশ চন্দ্র মিত্র এবং মাতার নাম সুরঞ্জনা দেবী । সতীশ চন্দ্রের পৈতৃক নিবাস এই প্রদেশেরই অন্তর্গত নদীয়া জেলার ফতেপুর গ্রামে হলেও তিনি কর্মসুত্রে কলকাতা ও তার বাইরে থাকতেন । এই পরোপকারী কথাসাহিত্যিকের বিদ্যাশিক্ষা কলকাতার শহরের অন্তর্ভুক্ত চেতলা স্কুলে আরম্ভ হয় । এই স্কুল থেকেই 1929 সালে প্রবেশিকা , কলকাতার আশুতোষ কলেজ থেকে আই. এ., বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে বি. এ. এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 1938 সালে এম. এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এই বরণীয় কথাসাহিত্যিক । এই মাননীয় কথাসাহিত্যিক রেল বিভাগের চাকুরি গ্রহন করে নিজের কর্মজীবন আরম্ভ করেন এবং 1955 সালে রেল বিভাগের ডেপুটি চিফ কন্ট্রোলার পদে উন্নীত হন । রেলে চাকুরিতে বহাল থাকাকালীন এই সম্মাননীয় কথাসাহিত্যিক সাহিত্যচর্চা আরম্ভ করেন এবং তার রচিত প্রথম উপন্যাস "ছাই" 1947 সালে প্রকাশিত হয় । 

1953 সালে "সাহেব বিবি গোলাম" নামক উপন্যাস রচনা করে বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক হিসাবে পরিগণিত হন এই প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক এবং এই উপন্যাসটি সাপ্তাহিক "দেশ" পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় । এই উপন্যাসের কয়েকটি কিস্তি প্রকাশের পরপরই নিন্দুকেরা অপপ্রচার শুরু করে এবং এই মহান কথাসাহিত্যিকে কুৎসাভরা চিঠি ও প্রাণনাশের হুমকিও দেয়, তা সত্ত্বেও তিনি নির্বিকার সাধকের মতো ন্যাশনাল লাইব্রেরীতে বসে এই উপন্যাসের পরবর্তী কিস্তিগুলি রচনা করে গেছেন । "সাহেব বিবি গোলাম" নামক উপন্যাস সম্পর্কে "দেশ" পত্রিকার ভূয়োদর্শী সম্পাদক সাগরময় ঘোষের উচ্ছ্বসিত মন্তব্য - "এ ধরনের উপন্যাস একশো বছরে মাত্র একটি রচিত হওয়াই যথেষ্ট, ভারতীয় সাহিত্যে তার স্থান চিনিয়ে দেয়"। এই উপন্যাসের অভাবনীয় সাফল্যের পরেই রেলের চাকুরি ত্যাগ করে এই পূজনীয় কথাসাহিত্যিক পুরোপুরিভাবে বাংলা সাহিত্য রচনায় নিজেকে নিয়োগ করেন । এরপরে এই স্বনামধন্য কথাসাহিত্যিক বেগম মেরী বিশ্বাস, কড়ি দিয়ে কিনলাম, একক দশক শতক, চলো কলকাতা, পতি পরম গুরু, এই নরদেহ, এরই নাম সংসার, মালা দেওয়া নেওয়া, তোমরা দুজনে মিলে, গুলমোহর , আসামী হাজির প্রভৃতি উপন্যাস রচনা করে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন । এই নির্ভীক কথাসাহিত্যিক বেগম মেরী বিশ্বাস, সাহেব বিবি গোলাম, কড়ি দিয়ে কিনলাম, একক দশক শতক, চলো যাই - এই পাঁচটি উপন্যাসের মধ্যে দিয়ে সুস্পষ্টভাবে 1690 সাল থেকে বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত সমগ্র ভারতবর্ষের ইতিহাসের বিবরণ দান করেছেন । 

এই প্রথিতযশা কথাসাহিত্যিক শতাধিক উপন্যাস এবং গল্পগ্রন্থ রচনা করেছেন এবং গল্পগ্রন্থগুলির মধ্যে - দিনের পর দিন, পুতুল দিদি, শ্রেষ্ঠ গল্প প্রভৃতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক কিশোরদের মন জয় করার জন্য "মৃত্যুহীন প্রাণ" নামে একটি গ্রন্থ এবং মরিশাস ভ্রমণ নিয়ে একটি ভ্রমণকাহিনী "চলতে চলতে" রচনা করেন । সাহিত্যিক হিসাবে বিমল মিত্র ছিলেন অন্তর্মুখী, জেদী ও রসিক প্রকৃতির । কোন প্রকাশ্য সাহিত্য সভায় কিংবা কোন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যাওয়া তিনি অপছন্দ করতেন। এই মহামান্য কথাসাহিত্যিকের রচিত অধিকাংশ উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থগুলি ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের স্থানীয় ভাষায় অনুদিত হয়েছে এবং অনেকগুলি গল্প ও উপন্যাস সিনেমা, নাটক ও যাত্রায় রূপায়িত হয়েছে । এই কীর্তিমান কথাসাহিত্যিক নবপর্যায়ে "কালিকলম" নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনাও করেন । এই কথাসাহিত্যিকের পাঠককুলে জনপ্রিয় হওয়ার প্রধান কারন হলো তার রচনায় সহজ ও সরল ভাষা, কাহিনীর চমকপ্রদ উপাদান, জটিলতাহীন গল্প এবং বিচিত্র চরিত্রের সমাহার ঘটেছে । 1964 সালে "কড়ি দিয়ে কিনলাম" উপন্যাসের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার এবং পাঞ্জাব থেকে "তারাচাঁদ বোতারিয়া" পুরস্কার লাভ করেছেন বিমল মিত্র । তার জনপ্রিয়তা কে কাজে লাগাবার জন্য বহু প্রকাশক অন্য লেখকের লেখা উপন্যাস তার নামে প্রকাশ করতেন। এদেশ অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি কড়ি দিয়ে কিনলাম বাদে সমস্ত বইয়ের প্রথম পাতায় সই সহ প্রকাশ করতেন।

1991 সালের ডিসেম্বর মাসের 2 তারিখে কলকাতা শহরের মধ্যস্থিত চেতলায় নিজ বাসভবনে এই চিরস্মরণীয় কথাসাহিত্যিকের দেহাবসান হয় । বাংলা সাহিত্যকে নিজ লেখনীর দ্বারা সমৃদ্ধ করার জন্য বাংলার সাহিত্যাকাশে উজ্জ্বল জোতিষ্ক হয়ে থাকবেন বিমল মিত্র ।



কৃতজ্ঞতা - Shining Subir.

নীচে তার রচনার ওপর ক্লিক করলে নির্দিষ্ট বইটি পেতে পারেন।

অ - ঔ ক - ন প - ম, শ স, ষ, র, ল, য, হ, ক্ষ





































































































একটি আবেদন - 
কেউ যদি কোনো বই/ পত্রিকা স্ক্যান করতে / দিতে চান 
বা সূচীপত্র ও.সি.আর. করতে চান - 
তাহলে নিচের ইমেলে যোগাযোগ করবেন 

babuipakhi819@gmail.com 

No comments:

Post a Comment