বাংলা ভাষার সমস্ত লেখক - এক জায়গায় ক্রমানুসারে
রমাপদ চৌধুরী
জন্ম - ২৮শে ডিসেম্বর , ১৯২২ মৃত্যু - ২৯শে জুলাই, ২০১৮
খরগপুর, ভারত কলকাতা, ভারত
রমাপদ চৌধুরী
জন্ম - ২৮শে ডিসেম্বর , ১৯২২ মৃত্যু - ২৯শে জুলাই, ২০১৮
খরগপুর, ভারত কলকাতা, ভারত
রমাপদ চৌধুরী একজন বাংলা উপন্যাসিক এবং গল্পকার। পিতা মহেশচন্দ্র চৌধুরী ও মাতা দুর্গাসুন্দরী দেবী। রমাপদ চৌধুরী ২৮ ডিসেম্বর, ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রদেশের মেদিনীপুর জেলার খড়গপুরে জন্ম গ্রহণ করেন (অধুনা পশ্চিমবঙ্গ)। তিনি খড়গপুরে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে, কলকাতায় উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকেই তিনি ইংরেজি সাহিত্যে এম.এ ডিগ্রী অর্জন করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই তাঁর লেখা-লেখি শুরু হয় । তিনি আনন্দবাজার পত্রিকার সঙ্গে বহু বছর যুক্ত ছিলেন, এমনকি তিনি পত্রিকার 'রবিবাসরীয়' বিভাগের সম্পাদক পদ অলঙ্কৃত করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি লেখা লেখি শুরু করলেও, বন্ধুদের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ করে মাত্র ২৫ বছর বয়সে প্রথম ছোটগল্প রচনা করেন। তাঁর জীবনের প্রথম গল্প 'উদয়াস্ত' প্রকাশিত হয়েছিল যুগান্তর পত্রিকায়। এরপর প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এম.এ পাস করে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকায় যোগ দেন। কর্মজীবনে কালক্রমে তিনি ওই পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন এবং পত্রিকার রবিবারের ক্রোড়পত্র 'রবিবাসরীয়' বিভাগের সম্পাদক হন। পাশাপাশি চলতে থাকে তাঁর নিজস্ব সাহিত্য চর্চা। ১৯৫৪ সালে প্রথম উপন্যাস 'প্রথম প্রহর' প্রকাশ পায়। ষাটের দশকে দেশ পত্রিকায় তাঁর উপন্যাস 'বনপলাশীর পদাবলী' পর্যায়ক্রমে প্রকাশিত হয়, যার ফলে তিনি পাঠক সমাজে পরিচিত মুখ হয়ে পড়েন।
তাঁর বহু বিখ্যাত উপন্যাসের মধ্যে ‘বনপলাশীর পদাবলী’, ‘এখনই’, ‘খারিজ’, ‘লালবাঈ’, ‘দ্বীপের নাম টিয়ারং’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে ১৯৬০ সালে তাঁর লেখা ‘বনপলাশীর পদাবলী’ ব্যপক প্রশংসিত হয় বাংলার সাহিত্যিক ও পাঠক মহলে। তাঁর বহু উপন্যাসের চলচ্চিত্রায়নও হয়েছে যেগুলি চলচ্চিত্র হিসেবেও দারুণ সাফল্য পায়। যেমন, দ্বীপের নাম টিয়ারং (১৯৬৩),পিকনিক (১৯৭২),বনপলাশীর পদাবলী (১৯৭৩), খারিজ (১৯৮২), এক দিন অচানক (১৯৮৯) ইত্যাদি বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। ১৯৮২ সালে টেস্ট টিউব বেবির জনক সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের জীবনী অবলম্বনে লিখেছিলেন 'অভিমূন্য'। পরবর্তী কালে চলচ্চিত্র পরিচালক তপন সিনহা এই কাহিনি অবলম্বনে হিন্দিতে তৈরি করেন বিখ্যাত ছবি 'এক ডক্টর কি মত'।
তিনি ১৯৬৩ সালে আনন্দ পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭১ সালে 'এখনই' উপন্যাসের জন্য রমাপদ চৌধুরীকে রবীন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। 'বাড়ি বদলে যায়' উপন্যাসের জন্য তিনি ১৯৮৮ সালে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। দীর্ঘ সাহিত্য জীবনে তিনি পঞ্চাশটির উপরে উপন্যাস রচনা করেন। এছাড়া দেশ পত্রিকার গল্প সংকলনও দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদনা করেন। ২০১১ সালে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মারক আন্তর্জাতিক পুরস্কার চালু করলে প্রথম বছর 'বনপলাশী পদাবলী' উপন্যাসের জন্য রমাপদ চৌধুরীকে ওই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। রমাপদ চৌধুরীর জীবনের উপর একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছে সাহিত্য অকাদেমি। ছবিটির পরিচালক রাজা মিত্র। ১৯৮৮ সালে তাঁর "বাড়ি বদলে যায়" উপন্যাসের জন্য তিনি সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পান।
২০১৫ সালে রমাপদ চৌধুরীর শেষ লেখা প্রকাশিত হয়। নাম 'হারানো কথা'। এর পর রীতিমতো ঘোষণা করেই লেখা থামিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
No comments:
Post a Comment