বাংলা ভাষার সমস্ত লেখক - এক জায়গায় ক্রমানুসারে
নারায়ন স্যান্যাল
নারায়ন স্যান্যাল
জন্ম - ২৬শে এপ্রিল, ১৯২৪ মৃত্যু - ৭ই ফেব্রুয়ারী, ২০০৫
কৃষ্ণনগর, নদীয়া, প.বঙ্গ, ভারত কলকাতা, ভারত
ছদ্মনাম ঃ বিকর্ণ।
সৃষ্ট চরিত্রঃ গোয়েন্দা চরিত্র অ্যাডভোকেট পি.কে. বাসু।
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত লেখক। এছাড়াও তিনি একজন পুর প্রকৌশলী । নিত্য নতুন বিষয়বস্তু নির্বাচন ছিল তাঁর রচনাশৈলীর এক বৈশিষ্ট্য। লেখকের আদি নিবাস নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর। তিনি কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র ছিলেন। কৃষ্ণনগরে জন্ম হলেও তিনি কলকাতায় শিক্ষাজীবন সম্পন্ন করেন। ম্যাট্রিক পাশ করেন আসানসোল ই আই আর বিদ্যালয় থেকে। স্কুলের খাতায় নাম ছিল নারায়নদাস সান্যাল। ১৯৪৮ সালে শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে বি.ই. সম্পন্ন করেন। তিনি ইন্সটিট্যুট অব ইঞ্জিনিয়ার্স (ইন্ডিয়া)-এর ফেলো ছিলেন। ১৯৮২ সালে সরকারী চাকুরী থেকে অবসর নিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে নারায়ন সান্যাল তাঁর বকুলতলা পি এল ক্যাম্প ও দন্ডক শবরি গ্রন্থের জন্য বিশেষভাবে পরিচত। পি.ডব্লু.ডি তে চাকরি করাকালীন দণ্ডকারণ্য অঞ্চলে তাঁর পোস্টিং হয়, জীবনের অভিজ্ঞতায় এই দুটি উপন্যাস লেখেন যা বিদগ্ধ পাঠক মহলে সমাদৃত হয়। এছাড়া বিজ্ঞান, শিল্প স্থাপত্য ভাস্কর্য ও সামাজিক, ঐতিহাসিক উপন্যাস প্রচুর লিখেছেন। শিশু কিশোরদের জন্যেও তাঁর রচনা সুখপাঠ্য। তাঁর অন্যান্য রচনাগুলির মধ্যে বিশ্বাসঘাতক, ষাট একষট্টি, হে হংসবলাকা, নক্ষত্রলোকের দেবতাত্মা, আবার যদি ইচ্ছা করো, রূপমঞ্জরী (হটু বিদ্যালঙ্কার এর জীবনী অবলম্বনে) অরণ্য দন্ডক, অশ্লীলতার দায়ে, না মানুষের পাঁচালী উল্লেখযোগ্য। রহস্য গোয়েন্দা কাহিনীও লিখেছেন, তাঁর কাঁটা সিরিজ নামে খ্যাত বইগুলির মূল চরিত্র ব্যারিস্টার পি কে বাসু স্ট্যানলি গার্ডেনারের প্যারি ম্যাসন এর আদলে তৈরি। তার রচিত কাহিনী নাগচম্পা (যদি জানতেম), সত্যকাম, পাষণ্ড পন্ডিত চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। এছাড়া বিজ্ঞান, শিল্প স্থাপত্য ভাস্কর্য ও সামাজিক, ঐতিহাসিক উপন্যাস প্রচুর লিখেছেন। শিশু কিশোরদের জন্যেও তাঁর রচনা সুখপাঠ্য।
নারায়ণ সান্যাল পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, নেশায় সাহিত্যিক। দায়িত্বপূর্ণ পদে থেকেও সময় বার করে দীর্ঘদিন ধরে সাহিত্যকর্মে নিযুক্ত। তাঁর সাহিত্য কর্মকাণ্ডের ব্যাপ্তিও বিচিত্র। তাঁর রচনাতে যেমন এসেছে তাঁর কর্মজীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা (দণ্ডক-শর্বরী, বকুলতলা পি এল ক্যাম্প, --) তেমনি এসেছে বিজ্ঞানের কথা (বিশ্বাসঘাতক, হে হংসবলাকা, নক্ষত্রলোকের দেবতাত্মা), শিল্পের কথা (প্রবঞ্চক, আবার যদি ইচ্ছা কর, অজন্তা অপরূপা-), বিচিত্র মানুষের কথা (লিন্ডবার্গ, গজমুক্তা)!
ডিটেকটিভ পিকে বাসু, বার-এট-ল (নাগচম্পা, কাঁটা সিরিজ-) কে তো সকলেই চেনেন। আবার প্যারাবোলা স্যার, পাষণ্ড পণ্ডিত, নীলিমায় নীল বা সত্যকামের মত একেবারে সামাজিক উপন্যাসও তিনি আমাদের উপহার দিয়েছেন। সর্বভারতীয় জনতার কাছেও তিনি পরিচিত হয়েছেন হৃষিকেশ মুখার্জীর বিখ্যাত ছবি ‘সত্যকাম’ এর কাহিনীকার রূপে।
তিনি ১৯৬৯ সালে অজন্তা অপরূপার জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার ও ২০০০ সালে রূপমঞ্জরীর জন্য বঙ্কিম পুরস্কারে ভূষিত হন। ৭ই ফেব্রুয়ারী, ২০০৪ সালে ৮০ বছর বয়সে তিনি কলকাতাতে পরলোকগমন করেন।
No comments:
Post a Comment