বাংলা ভাষার সমস্ত লেখক - এক জায়গায় ক্রমানুসারে
অদ্বৈত মল্লবর্মণ
জন্ম - ১লা জানুয়ারী ১৯১৪ মৃত্যু - ১৬ই এপ্রিল, ১৯৫১
কুমিল্লা, বাংলাদেশ কলকাতা, ভারত
অদ্বৈত মল্লবর্মণ
কুমিল্লা, বাংলাদেশ কলকাতা, ভারত
"তিতাস একটি নদীর নাম। তার কূলজোড়া জল, বুকভরা ঢেউ, প্রাণভরা উচ্ছ্বাস।
স্বপ্নের ছন্দে সে বহিয়া যায়। ভোরর হাওয়ায় তার তন্দ্রা ভাঙ্গে, দিনের সূর্য তাকে তাতায়; রাতে চাঁদ ও তাঁরারা তাকে নিয়া ঘুম পাড়াইতে বসে, কিন্তু পারে না।"
*****
"তিতাস জীবনের শেকড় প্রাকৃত জীবনের গভীরে প্রোথিত। এই প্রাকৃত জীবনকে বাইরে থেকে যতই সরল দেখাক এর ভেতরে প্রবেশ করলে দেখা যাবে,
তা বহু ভঙ্গিমা ও বৈচিত্র্যের অধিকারী।"
অদ্বৈত মল্লবর্মণ (১লা জানুয়ারি, ১৯১৪- ১৬ই এপ্রিল, ১৯৫১) বাঙালি ঔপন্যাসিক ও সাংবাদিক। তৎকালীন কুমিল্লা জেলার অধীনে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া মহকুমার গোকর্ণঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিতাস একটি নদীর নাম শিরোনামের একটিমাত্র উপন্যাস লিখে তিনি বাংলা সাহিত্যের চিরস্মরণীয় ও অমর প্রতিভা হিসেবে সবিশেষ স্বীকৃতি লাভ করেন। এই উপন্যাসটি সর্বপ্রথম 'মাসিক মোহাম্মদী' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
এক দরিদ্র ধীবর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন অদ্বৈত মল্লবর্মণ। তাঁর পিতার নাম ছিল অধরচন্দ্র। শৈশবেই পিতৃ-মাতৃহীন হন তিনি। গ্রামের মালোদের চাঁদার টাকায় তাঁর লেখাপড়ার খরচ নির্বাহ হতো।
১৯৩৩ সালে বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা সদরে অবস্থিত অন্নদা উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয় থেকে ১ম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর কুমিল্লা জেলার ভিক্টোরিয়া কলেজে কিছুদিন আই,এ ক্লাসে অধ্যয়ন করেন। কিন্তু মেধাবী ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও আর্থিক সঙ্কটের কারণে তাঁর পড়াশোনা শেষ হয়ে যায়।
১৯৩৪ সালে কলেজের পড়া ছেড়ে দিয়ে শুধুমাত্র অর্থ উপার্জন ও জীবিকা নির্বাহের উদ্দেশ্যে কলকাতা গমন করেন। সেখানে মাসিক 'ত্রিপুরা' পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে শুরু করেন কর্মজীবন। এরপর ১৯৩৬ সালে ক্যাপ্টেন নরেন দত্ত পরিচালিত 'নবশক্তি' পত্রিকায় যোগ দেন তিনি। পত্রিকাটির সম্পাদক কবি প্রেমেন্দ্র মিত্রের সহকারী হিসেবে সহ-সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন। নবশক্তি'র প্রকাশনা বন্ধ হয়ে গেলে তিনি মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ'র "মাসিক মোহাম্মদী" পত্রিকার সম্পাদকের সহকারী হিসেবে যোগদান করেন। তিন বছর একাদিক্রমে এ পদে দায়িত্ব পালন করেন অদ্বৈত। এ সময়ে একই সঙ্গে দৈনিক আজাদ পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছিলেন তিনি।
এছাড়াও, নবযুগ, কৃষক ও যুগান্তর পত্রিকায় সহকারী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আমৃত্যু তিনি এ পদে বহাল ছিলেন। আয় বৃদ্ধির জন্য বিশ্বভারতীর প্রকাশনা শাখায় খণ্ডকালীন চাকুরীও গ্রহণ করেন তিনি।
অদ্বৈত মল্লবর্মণের সমগ্র সাহিত্যিক জীবনে 'তিতাস একটি নদীর নাম' উপন্যাসটি অমর কীর্তি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। প্রতিকূল সংঘাতে ক্রমশ মুছে-আসা মৎস্যজীবী যে মানুষদের কাহিনী এই উপন্যাসে বর্ণিত হয়েছে তিনি সেই 'মালো' সম্প্রদায়েরই লোক ছিলেন। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও সুগভীর অন্তঃদৃষ্টির কারণেই উপন্যাসটিতে ধীবর সমাজের নিষ্ঠুর জীবনসংগ্রামের সাধারণ কাহিনীকে দিয়েছেন অবিনশ্বর ও অসাধারণ।
স্বল্পকালীন জীবনে অদ্বৈত মল্লবর্মণ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করে গেছেন। এছাড়াও তিনি বহু শিশুপাঠ্য কবিতাও রচনা করেছেন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তাঁর লেখা বেরোলেও চল্লিশের দশকে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমূখের পাশাপাশি বুদ্ধদেব বসুসম্পাদিত 'এক পয়সায় একটি' গ্রন্থ সিরিজ আকারে লিখে তিনি বিশেষভাবে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তিতাস নদী ও তার দু'কূলের মানুষের জীবনযাত্রাকে ঘিরে রচিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম' উপন্যাসে কিশোর, সুবল, অনন্ত, বনমালীপ্রমুখ চরিত্রগুলো স্থান পেয়েছে।
তাঁর এ বিখ্যাত উপন্যাসটি প্রথমে মাসিক পত্রিকা মোহাম্মদীতে প্রকাশিত হয়েছিল। কয়েকটি অধ্যায় মোহাম্মদীতে মুদ্রিত হবার পর উপন্যাসটির মূল পাণ্ডুলিপি রাস্তায় খোঁয়া যায়। বন্ধু-বান্ধব ও অতি আগ্রহী পাঠকদের আন্তরিক অণুরোধে তিনি পুণরায় কাহিনীটি লেখেন। কল্যানী যক্ষ্মা হাসপাতালে যাবার আগে এই গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি বন্ধু-বান্ধবকে দিয়ে যান।
মাত্র ৩৭ বছর বয়সে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার নারকেলডাঙ্গার ষষ্ঠীপাড়ার নিজ বাড়িতে অদ্বৈত মল্লবর্মণ মৃত্যুবরণ করেন।
অকৃতদার নিঃসঙ্গ অদ্বৈত বহু কৃচ্ছ্রসাধন ও উদয়াস্ত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যতটুকু আয়-উপার্জন করতেন তার অধিকাংশই ব্যয় করতেন দুঃস্থ পরিচিতজনদের মধ্যে। তাঁর গ্রন্থপ্রীতি ছিল অসাধারণ। নিদারুণ অর্থকষ্টের মধ্যেও যথাসম্ভব বই কিনেছেন তিনি।
কৃতজ্ঞতা - Wikipedia.
নীচে তার রচনার ওপর ক্লিক করলে নির্দিষ্ট বইটি পেতে পারেন।
অ - ঔ | ক - ন | প - ম, শ | স, ষ, র, ল, য, হ, ক্ষ |
---|---|---|---|
একটি আবেদন -
কেউ যদি কোনো বই/ পত্রিকা স্ক্যান করতে / দিতে চান
বা সূচীপত্র ও.সি.আর. করতে চান -
তাহলে নিচের ইমেলে যোগাযোগ করবেন
কেউ যদি কোনো বই/ পত্রিকা স্ক্যান করতে / দিতে চান
বা সূচীপত্র ও.সি.আর. করতে চান -
তাহলে নিচের ইমেলে যোগাযোগ করবেন
babuipakhi819@gmail.com
No comments:
Post a Comment