বাংলা ভাষার সমস্ত লেখক - এক জায়গায় ক্রমানুসারে
অজেয় রায়
জন্ম - ১৯৩৪, আগস্ট ১৭ মৃত্যু - ২০০৮, সেপ্টেম্বর ৩ শান্তিনিকেতন, পশ্চিমঙ্গ, ভারত
অজেয় রায় ১৯৩৫ সালে বীরভূম জেলার শান্তিনিকেতনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর নাম রেখেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তার ছাত্রজীবন অতিবাহিত হয় কলকাতা ও শান্তিনিকেতনে। বিশ্বভারতীতে পড়াশোনা শেষ করার পরে তিনি কিছুদিন শিক্ষকতা করেছিলেন। সেখানকার ছাত্রছাত্রীদের মুখে মুখে বানিয়ে বলতে বলতে তাঁর গল্প বানানোর শুরু। কিছুকাল শিক্ষকতা করার পর বিশ্বভারতী কৃষি অর্থনীতি গবেষণাকেন্দ্রের কর্মীরূপে কাজ করতেন। পরবর্তীকালে সত্যজিৎ রায় ও লীলা মজুমদারের সান্নিধ্যে এসে লেখা শুরু আর শুরু থেকেই তা যাকে বলে সুপারহিট! লেখকের বিজ্ঞানভিত্তিক লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়ে স্বয়ং সত্যজিৎ রায় তাঁর থেকে লেখা চেয়ে পাঠান সন্দেশে প্রকাশ করার জন্য। শিশু কিশোরদের জন্যে অজেয় রায় প্রচুর কাহিনী রচনা করেছেন। তার লেখা সন্দেশ, আনন্দমেলা, শুকতারা, কিশোর ভারতী ইত্যাদি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তার কয়েকটি গল্পে চিত্রাঙ্কন করেছেন সত্যজিৎ রায়। উল্লেখযোগ্য বইগুলির মধ্যে আছে আমাজনের গহনে, ফেরোমন, মুঙ্গু, মানুক দেওতার রহস্য সন্ধানে, কিশোর রচনা সংগ্রহ, এডভেঞ্চার সমগ্র ইত্যাদি। তার সৃষ্ট গোয়েন্দা ও সাংবাদিক চরিত্রের নাম দীপক রায়।
অজেয় রায় হলেন প্রকৃত বিজ্ঞানভিত্তিক কিশোর উপন্যাসের জগতে একজন বিশিষ্ট লেখক। এঁর গল্পে সরস ভাষায় প্রকৃত বৈজ্ঞানিক তথ্য পরিবেশন করা হয়। এগুলি পাঠ্যপুস্তকের চাইতে বেশি মূল্যবান, কারণ ছেলেমানুষরা আনন্দ এবং আগ্রহের সঙ্গে পড়ে। এঁর প্রচ্ছন্ন রসিকতাগুলিও পরম উপভোগ্য। আজগুবি গল্প লেখা বরং সহজ, কিন্তু তথ্যসমৃদ্ধ আনন্দের উপাদানের অনেক বেশি দাম।
ছোটদের জন্যে লেখার স্বীকৃতি স্বরূপ অজেয় রায় একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন, তার মধ্যে আছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত আশালতা সেন স্মৃতি পুরস্কার, পশ্চিমবঙ্গ শিশু সাহিত্য পরিষদের পুরস্কার ও পদক, সুবিনয় রায় স্মৃতি পদক, পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রদত্ত শিশুসাহিত্যে বিদ্যাসাগর স্মৃতি পুরস্কার।
সারাজীবন শুধুমাত্র ছোটোদের জন্য লেখালিখি করে যাওয়া এই মানুষটি ২০০৮ সালে আমাদের ছেড়ে চলে যান।
No comments:
Post a Comment