বাংলা ভাষার সমস্ত লেখক - এক জায়গায় ক্রমানুসারে
শ্রী পারাবত
জন্ম - ১লা জানুয়ারী, ১৯২৭ মৃত্যু - ২রা নভেম্বর, ২০১০
কোচবিহায়, প.বঙ্গ, ভারত কলকাতা, ভারত
শ্রী পারাবত
কোচবিহায়, প.বঙ্গ, ভারত কলকাতা, ভারত
মূলনাম ঃ প্রবীর কুমার গোস্বামী
সাধারনত লেখক ছদ্মনামের আড়াল নিলেও মূল নামেই বিখ্যাত থাকেন। বাংলা সাহিত্যে যে কজন এর ব্যাতিক্রম, তাঁদের মধ্যে অগ্রনী প্রবীর কুমার গোস্বামী, যিনি 'শ্রীপারাবত' নামের আড়ালে চিরদিন রয়ে গেলেন।
১৯২৭ সালের ১লা জানুয়ারী কোচবিহারে তাঁর জন্ম। বাবা সুধীর কুমার গোস্বামী ও মাতা প্রীতিরিন্দু দেবী। তাঁর পূর্বপুরুষ ছিলেন বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী ও অদ্বৈত আচার্য (চৈতন্য মহাপ্রভুর গুরু)। কৃষ্ণনগরে ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর অফিস, বনগাঁ ফুড প্রোকিওরমেন্ট অফিসে কাজ করলেও অবশেষে তিনি কলকাতা পুলিসে জয়েন করেন এবং ১৯৮৪ সালে তিনি অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার অফ পোলিস পদে অবসর নেন।
জীবনে নেশা বলতে ছিল দুটোই - চা এবং লেখা। পিতৃকূল ও মাতৃকূলে সাহিত্যের আবহাওয়া ছিলই এবং সেটাই হয়তো তাঁকে তাড়িয়ে বেড়াত আকৈশোর। ছোটগল্প কত গুলি লিখেছেন, সেটা গুনতে বোধহয় এক হাতের আঙ্গুল কটিই যথেষ্ট। লিখেছেন পৌনে শতাধিক উপন্যাস, যার সিংহ ভাগই ঐতিহাসিক উপন্যাস। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নতক এই স্বনামধন্য লেখক মূলত ঐতিহাসিক উপন্যাস লিখলেও কিছু সামাজিক ও ছোটদের জন্য উপন্যাস লিখেছে। যদিও তিনি অমর হয়ে থাকবেন তাঁর ঐতিহাসিক উপন্যাসের জন্য।
সার্থক ঐতিহাসিক উপন্যাস সৃষ্টি একদিক থেকে ক্ষুরস্য ধারার মতোই শাণিত পথে চলা। তথ্য থেকে বিন্দুমাত্র সরে আসা যাবে না, অথচ নীরস ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক হলেও চলবে না। বাস্তবের কঠিন মাটিতে চলতে চলতে যেখানে ইতিহাস নীরব, সেখানেই লেখক যুক্তি ও অনুমান প্রয়োগ করতে পারেন এই ধরনের রচনায়। ঐতিহাসিক তথ্য থেকে বিচ্যুত না হয়ে ইতিহাসে উল্লেখিত মুখ্য চরিত্র তো বটেই, অনুল্লেখিত তৎকালীন সাধারণ নরনারীর সৃষ্ট চরিত্রগুলোকেও বিশ্বাস্য রূপে আর পাঁচটি উপন্যাসের চরিত্রের মতোই তরঙ্গিত দুঃখসুখে ভরা জীবন্ত এবং সবরকম পাঠকের কাছে উপভোগ্য করে তুলতে হবে। এই পরীক্ষায় শ্রী পারাবত কালোর্ত্তীন।
সাহিত্যিক রেবন্ত গোস্বামী তাঁর ছোট ভাই ও অমিয় ভূষন মজুমদার তাঁর মামাতো ভাই। তাঁর বিখ্যাত রচনাগুলির মধ্যে রয়েছে আমি সিরাজের বেগম(১৯৬০), মমতাজ দুহিতা জাহানারা (১৯৭২), আরাবল্লী থেকে আগ্রা (১৯৬৫), অযোধ্যার শেষ নবাব (১৯৯১), আলাউদ্দিন খিলজি (২০০২), কিতাগড়, মহাপ্রেম (১৯৬৭), বাহাদুর শাহ (১৯৭১), চিতোর গড়(১৯৭৭), রানাদিল (১৯৭৬), মহম্মদ বিন তুঘলক (১৯৯৮) প্রভৃতি।
২০১০ সালের ২রা নভেম্বর ৮৩ বছর বয়সে কলকাতায় তিনি পরলোকগমন করেন।
No comments:
Post a Comment