বিশেষ ঘোষণা

বিশেষ ঘোষণাঃ কারিগরি কারণ বশতঃ বেশ কিছু বইয়ের লিঙ্ক কাজ করছে না। সেগুলো ধীরে ধীরে ঠিক করে দেওয়ার কাজ চলছে। কিছু বই অপেক্ষাকৃত ভালো করতে গিয়ে একটু সময় লাগছে। ফেসবুক গ্রুপে প্রত্যেক আপডেট জানিয়ে দেওয়া হবে। মাঝে মাঝে নতুন বই দেবার ও চেষ্ট চলছে ।

আশুতোষ মুখোপাধ্যায়

বাংলা ভাষার সমস্ত লেখক - এক জায়গায় ক্রমানুসারে

আশুতোষ মুখোপাধ্যায়

জন্ম - ৭ই সেপ্টেবর, ১৯২০                          মৃত্যু - ৪ঠা মে, ১৯৮৯
ঢাকা, বাংলাদেশ                                                    কলকাতা, ভারত



সাহিত্যিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ঢাকা শহরে। পিতা বিদ্যালয় পরিদর্শক পরেশ চন্দ্র মুখোপাধ্যায় এবং মাতা তরুবালা দেবী। পিতার সরকারী চাকরির কারণে তত্কালীন পশ্চিম ও উত্তরবাংলার অনেক স্কুল-কলেজে পড়াশুনা করেছিলেন। স্নাতক হয়েছেন হুগলী মহসিন কলেজ থেকে । পিতার সরকারী চাকরির কারণে বহু উচ্চ ও মধ্যবিত্ত পরিবার সম্পর্কে খুঁটিনাটি অভিজ্ঞতা ছিলো। চাকরিতে অনীহা ছিলো। প্রথম জীবনে এক-একে ন'টি চাকরিতে প্রবেশ এবং পরিত্যাগ। শেষে যুগান্তর সংবাদপত্রের সাহিত্য বিভাগে সম্পাদনার কাজে স্থিতি এবং কালক্রমে সম্পাদক হয়েছিলেন। বাইশ বছর বয়সে হঠাৎই লেখার প্রেরনা আসে। দীর্ঘ আট বছর বাদে স্বীকৃতির সূচনা হয়। এই সময়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে ফিচার-লেখক হিসাবে সুনাম অর্জন করেন। প্রথম জনপ্রিয় উপন্যাস 'চলাচল'। ছোটগল্পগ্রন্থ ও উপন্যাসের সংখ্যা শতাধিক। তাঁর বহু উপন্যাস হিন্দি ও অন্যান্য ভারতীয় ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ভারতের প্রায় সর্বত্র ঘুরেছেন। উনিশশো পঞ্চাশ থেকে উনিশশো উননব্বই—প্রায় চল্লিশ বছর ধরে, জীবনের শেষতম দিনটি পর্যন্ত অবিরাম লেখনী-কর্ষণে উৎপন্ন হয়েছে বহুমুখী সোনালি ফসলের সম্ভার।


সাহিত্যিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস ও গল্প অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে অনেকগুলি চলচ্চিত্র, যেমন- বাংলায় ‘সাত পাকে বাঁধা’ ও হিন্দিতে ‘কোরা কাগজ’; ছোট গল্প ‘নার্স মিত্র’ নিয়ে করা আরেক সুপার-হিট ‘দীপ জ্বেলে যাই’ ও হিন্দিতে ‘খামোশি’; ‘চলাচল’ ও হিন্দিতে ‘সফর’; ‘পঞ্চতপা’, ‘আমি সে ও সখা’ ও হিন্দিতে ‘বেমিশাল’।

চিত্রনাট্য লিখতেন বটে, কিন্তু তাতে যে খুব ভাললাগা ছিল, তাও কিন্তু না। বম্বে থেকে শশধর মুখার্জির প্রোডাকশন-হাউসে স্ক্রিপ্ট রাইটার হওয়ার ডাক এল। মোটা মাসমাইনে। গাড়িবাড়ি সমেত বিলাসী অফার। ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। সাফ কথা, “আমি কলম ধরেছি সাহিত্যিক হব বলে। ফরমাইসি স্ক্রিপ্ট লেখার জন্য নয়। নিজের লেখা গপ্পো-উপন্যাসে সেটা করে দিই, আমার লেখা বলে, ব্যস।”
শুধু ‘কাল তুমি আলেয়া’র কথা তুললে, হেসে বলত, ‘ও তো উত্তম। ওর কথা আলাদা।’
তাঁর আর এক নিবিড় বন্ধু হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। ‘দীপ জ্বেলে যাই’-এর মিউজিক ডিরেক্টর হিসেবে কোনও এক আইনি জটিলতায় জড়িয়ে প্রথম ফোন করেছিলেন। সেই শুরু। তারপর থেকে হেমন্তকুমার আশুতোষবাবুর প্রতাপাদিত্যের বাড়িতে নিজে তো আসতই, বম্বে-কলকাতার প্রায় সব নামীদামি গায়ক-গায়িকাকে ধরে নিয়ে আসত আশুতোষের কালরোগে ধরা একমাত্র ছেলে, গানপাগল জয়কে গান শোনাতে। সেই ঘরে বসে লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে, কিশোরকুমার, মান্না দে গান গেয়েছেন। এসেছেন সুনন্দা পট্টনায়ক, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, আরতি মুখোপাধ্যায়, প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়। একের পর এক গান করে গেছেন শ্যামল মিত্র, সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য, নির্মলা মিশ্র, হৈমন্তী শুক্ল, বনশ্রী সেনগুপ্ত...!
বিদায় বেলায় নিথর বন্ধুর হিম ঠান্ডা কপালে হাত রেখে ফুঁপিয়ে উঠে হেমন্তকুমার বলেছিলেন, “আমার বেলায় কে আমাকে সী অফ করবে, বলতে পারেন?”

লেখার জন্য নিজের খাটের ওপর একটা জলচৌকি, এ-ফোর সাইজের রাইটিং প্যাড আর নিজস্ব কয়েকটা কলম ব্যস, আর কিচ্ছু না। তাতেই যা হওয়ার হয়েছে। সরস্বতী পুজোর দিন, প্রতি বছর একটা না একটা গল্প বা উপন্যাসের লাইন লিখতেন ওই জলচৌকি টেনে নিয়ে। ওটাই ছিল হয়তো তাঁর অর্ঘ্য।

একেবারে প্রথম দিকের লেখা ‘পঞ্চতপা’ উপন্যাসটি উৎসর্গ করেছিলেন তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এদিকে প্রায় দু’মাস তাঁর দিক থেকে কোনও সাড়া শব্দ নেই। তখন কলকাতার একটি খবরের কাগজে সাব এডিটরের কাজ করেন। হঠাৎই এক দুপুরে অফিসে হাজির তারাশঙ্কর। সোজা তার হাত ধরে টেনে তুলে সম্পাদক পরিমল গোস্বামীকে তিনি বললেন, ‘একটা বিশেষ দরকারে ওকে নিয়ে যাচ্ছি।’ একেবারে পুলিশি গ্রেপ্তারি যাকে বলে! গাড়িতে তুলে নিয়ে যেতে যেতে জেরা, ‘তোমার পঞ্চতপা-র ছড়া-পাঁচালিগুলো তুমি নিজে লিখেছ?’ শুকনো মুখে ‘আসামি’র জবাব, ‘হ্যাঁ’ এ বার প্রশ্ন, ‘কেন? তুমি নিজে বানাতে গেলে কেন?’ এ বার নতুন লেখকের যা-হয়-হোক মরিয়া জবাব, “‘কবি’ উপন্যাসেও তো অনেক ছড়া পাঁচালি আছে। ‘কবি’র লেখক হয়ে আপনি নিজে সেগুলো বানাতে গেলেন কেন?’ মানী জ্যেষ্ঠের মুখের ওপর বেফাঁস কথা বলে উত্তরের অপেক্ষা করে থাকা ছাড়া আর উপায় কী! কিন্তু কোনও জবাব নেই। লম্বা সারাটা পথে গম্ভীর মুখে বসে ‘কবি’র লেখক তারাশঙ্কর। বাড়িতে পৌঁছে গাড়ি থেকে নেমে ইশারায় সঙ্গে আসতে বলে গটগটিয়ে সোজা ভেতরের ঘরে স্ত্রীর কাছে গেলেন তারাশঙ্কর। আঙুল তুলে ‘আসামী’কে দেখিয়ে বললেন, ‘এই হল আশু, আমাকে ওর নিজের বানানো ছড়া-পাঁচালি লেখা বই উপহার দিয়েছে। ওকে কিছু খেতে দাও তো।’ তার পর গায়ের জামাটা খুলে ব্র্যাকেটে ঝুলিয়ে কাছে এসে, ‘এইবার বিশেষ দরকারি কাজটা সেরে নিই। যে জন্য এভাবে নিয়ে এলাম।’ খালি গায়ে এগিয়ে এসে দু’হাত বাড়িয়ে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর খোলা বুকে জাপটে ধরলেন তাঁর চেয়ে অনেকই ছোট, সদ্য কুঁড়ি-ফোঁটা আরেক লেখককে।

সমরেশ বসু এবং তিনি এক সময়ের লেখক। কিন্তু আশুতোষ মুখোপাধ্যায় বলতেন, ‘সমরেশ হল কাঁচা মাটি ছেনে উঠে আসা জীবনঘাঁটা সাহিত্যিক। আমি ওর মতো লিখতে পারব না। আমরা তো ড্রইংরুম রাইটার।’ তখন সমরেশ বসুর ‘বিবর’ আর ‘প্রজাপতি’ নিয়ে তুলকালাম। এদিকে তিনি এ নিয়ে কোনও কথাই বলছেন না। অপেক্ষায় থেকে থেকে একদিন সমরেশ বসু বললেন, ‘পড়েছেন?’ প্রশ্নের মতোই জবাবও একটি শব্দে, ‘পড়েছি।’ আবার এক শব্দের জিজ্ঞাসা, ‘দুটোই?’ উত্তর, ‘দুটোই।’ এবার ধৈর্য হারিয়ে সমরেশ বসু, ‘কী হল? কিছু বলবেন না?’ দুদিকে মাথা নাড়িয়ে আশুতোষের উত্তর, ‘নাঃ, আমার কিচ্ছু বলার নেই। আমি এরকম লিখতেও পারব না। লিখবও না।’ এ কথায় প্রচণ্ড ক্ষোভে সমরেশ বললেন, ‘ওঃ। বুঝেছি। টিপিক্যাল মিডল ক্লাস মেন্টালিটিতে ওই সেক্স আর জৈবিক ব্যাপারগুলো হজম করতে পারছেন না। তাই তো? পারবেন, সেক্স ছাড়া শরীর ছাড়া যৌনতার গন্ধ ছাড়া একটাও রোম্যান্টিক লেখা লিখতে।’ সঙ্গে সঙ্গে জবাব, ‘পারব। লিখে সব থেকে আগে আপনাকেই পড়াব।’ এর পরই বাবা লিখল, ‘মনমধুচন্দ্রিকা’। যেখানে নায়ক-নায়িকা শরীরী হওয়া দূরে থাক, নিজেদের মধ্যে একটা কথাও বলেনি। লেখা পড়ে সমরেশ বসু বলেছিলেন, ‘আনথিংকেবল্! কনগ্র্যাচুলেশনস্।’ তার পর, ‘আমারও কেবল একটা কথাই বলার আছে ... আমিও পারব না... তবে আপনার মতো বলতে পারছি না ‘লিখবও না’। দুই বন্ধুর উষ্ণ হাতের তালু তখন একে অপরের কাছে বন্দি।
.

আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের গ্রন্থ তালিকা -
• পঞ্চতপা
• চলাচল
• কাল তুমি আলেয়া
• অন্য নাম জীবন
• অপরিচিতের মুখ
• আনন্দরূপ
• আবার আমি আসবো
• আরো একজন
• আশ্রয়
• একটি বিশ্বাসের জন্ম
• একাল ওকাল
• খনির নুতন মনি
• দিনকাল
• দুটি প্রতিক্ষার কারণে
• নগর পারে রূপনগর
• নিষিদ্ধ বই
• পিন্ডিদার গোপ্পো
• পিন্ডিদার পঞ্চবান
• পিন্ডিদার রিটায়ারমেন্ট
• পুরুশোত্তম
• বলাকার মন
• বাসকশয়ন
• মেঘের মিনার
• রূপেরহাটে বিকিকিনি
• লিডার বটে পিন্ডিদা
• শত রূপে দেখা
• সজনীর রাত পোহালো
• সবুজতরণ ছাড়িয়ে
• সিকেপিকেতিকে
• সোনার হরিণ নেই
• পরকপালে রাজা রানী
আরও অনেক।


কৃতজ্ঞতা - প্রতাপ সাহা।


নীচে তার রচনার ওপর ক্লিক করলে নির্দিষ্ট বইটি পেতে পারেন।

অ - ঔ ক - ন প - ম, শ, ষ স, র, ল, য, হ, ক্ষ

















































































































একটি আবেদন - 
কেউ যদি কোনো বই/ পত্রিকা স্ক্যান করতে / দিতে চান 
বা সূচীপত্র ও.সি.আর. করতে চান - 
তাহলে নিচের ইমেলে যোগাযোগ করবেন 

babuipakhi819@gmail.com 

No comments:

Post a Comment