বাংলা ভাষার সমস্ত লেখক - এক জায়গায় ক্রমানুসারে
রবি শংকর বল
রবি শংকর বল
জন্ম - ১৯৬২ মৃত্যু - ১৩ই ডিসেম্বর, ২০১৭
কলকাতা, ভারত
“একদিন রাস্তায় এলোমেলো হাঁটতে হাঁটতে আপনি যদি এমন কাউকে দেখে ফেলেন, যাকে চিত্রে বা স্বপ্নে দেখা যায়, হয়তো একটি মুহূর্তের জন্য মুখোমুখিও দেখা হয়ে যেতে পারে, তবে কী মনে হবে আপনার? মনে হবে না, এক আশ্চর্য দরজা খুলে গেছে আপনার সামনে?”
রবিশংকর বল এ যুগের বিরলতম লেখকদের মধ্যে একজন। মার্ক্সীয় সময়ের পর যে জড়বাদ সাহিত্যে জর্জরিত হয়ে পড়ে, সবখানে যখন কেবলই যুক্তি আর বুদ্ধির একঘেয়ে সীমাবদ্ধতার তুমুল চর্চা আর আধিপত্য, সেখানে রবিশংকর বলকে এক অবিস্মরণীয় প্রতিবাদী হয়ে উঠতে দেখা যায়।
তিনি মূলত ইসলামী ইতিহাস, মধ্য এশিয়া ও প্রাচ্য-দর্শনের পন্ডিত। যা পদে পদেই প্রমাণিত হয় তাঁর সাহিত্যকর্মে, বিশেষ করে ‘আয়নাজীবন’ আর ‘দোজখনামা’ বইয়ের ভেতর। বলার ভঙ্গি থেকে বিচার করলে সেগুলো রীতিমত আশ্চর্য উপন্যাস; আখ্যানের ভেতরে অসংখ্য উপখ্যানের অদ্ভুত আরশিনগর। ‘আয়নাজীবন’ উপন্যাসের কথাই শুনুন- ইবনে বতুতার মহাজীবনবৃত্তান্তের এক অপ্রকাশিত, যাদুময় খোলশের উন্মেষ ঘটতে চলেছে। বলা বাহুল্য, মধ্যপ্রাচ্যে তখন কিছু দরবেশ, ফকিরদের মুসাফিরানা।
ঘোরের, কবিতার শহর কোনিয়াতে ইবনে বতুতা একজন প্রেমপুরুষের মতো জালালুদ্দিন রুমীর খোঁজে দিকহারা হয়ে ওঠেন। সুফি শমায় শুনতে পান বিধাতার নিরানব্বইটি নামের ওঙ্কার। কবির খোঁজ তিনি আদৌ পান কি? দেখা পেলেও বতুতার অভিজ্ঞতায় কীভাবে হলেন মাওলানা রুমী? ইবনে বতুতা বারবার এই গুপ্তসাধনায় উপলব্ধি করেন, তিরিশ বছরের এই ভ্রমণ কেবলই তাঁর ‘ঘরে ফেরার তাড়না’!
যাদের আমার মতো এমন আবেগীয় বিশ্বাস রয়েছে, যে বইয়ের মধ্যে গোটা বিশ্বের অধরা সত্তাকে ধরা সম্ভব, তাঁদের কাছে রবিশংকর বল পৃথিবীর বিরলতম রুবির চেয়ে কম নয়।
দোজখনামা বইয়ের জন্য ২০১১ সালে তিনি বঙ্কিম পুরস্কারে ভূষিত হন।
No comments:
Post a Comment