বাংলা ভাষার সমস্ত লেখক - এক জায়গায় ক্রমানুসারে
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়
জন্ম - ডিসেম্বর, ১৮২৭ মৃত্যু - ১৩ই মে, ১৮৮৭
হূগলী, ভারত কলকাতা, ভারত
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়
জন্ম - ডিসেম্বর, ১৮২৭ মৃত্যু - ১৩ই মে, ১৮৮৭
হূগলী, ভারত কলকাতা, ভারত
" স্বাধীনতা- হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায় ?
দাসত্বশৃঙ্খল বল কে পরিবে পায় হে, কে পরিবে পায় ।।
কোটিকল্প দাস থাকা নরকের প্রায় হে, নরকের প্রায় ।
দিনেকের স্বাধীনতা, স্বর্গ-সুখ তায় হে, স্বর্গ-সুখ তায় ।।
সার্থক জীবন আর বাহু-বল তার হে, বাহুবল তার ।
আত্মনাশে যেই করে দেশের উদ্ধার হে, দেশের উদ্ধার ।।...
অতএব রণভূমে চল ত্বরা যাই হে, চল ত্বরা যাই ।
দেশহিতে মরে যেই, তুল্য তার নাই হে, তুল্য তার নাই ।।"
উপরের কবিতার লাইনগুলি বাংলা সাহিত্যের খ্যাতনামা কবি রঙ্গলাল বন্দোপাধ্যায় রচিত "পদ্মিনী উপাখ্যান" নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত "স্বাধীনতা" নামক কবিতা থেকে উদ্ধৃত করা হয়েছে । রঙ্গলাল বন্দোপাধ্যায় ছিলেন কবি, গদ্যলেখক, সাংবাদিক, প্রবন্ধকার ও অনুবাদক। 1887 সালের ১৩ই মে এই দেশবরেণ্য কবি প্রয়াত হন । 1827 সালে ডিসেম্বর মাসে হুগলি জেলার বাকুলিয়া গ্রামে এই মহান কবি জন্মগ্রহন করেন । রঙ্গলালের পিতার নাম রামনারায়ন বন্দোপাধ্যায় । শৈশবকালে রঙ্গলাল পিতৃহীন হন । এই বরণীয় কবি বাল্যকালে বাকুলিয়া গ্রামেই স্থানীয় পাঠশালা ও মিশনারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করিবার পর উচ্চশিক্ষার জন্য হুগলি মহসিন কলেজে পাঠরত ছিলেন । কলেজজীবনেই এই মহান কবির দ্বারা রচিত প্রথম কবিতা ঈশ্বর চন্দ্র গুপ্তের "সংবাদ প্রভাকর" নামক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এই শ্রদ্ধেয় কবি 1852 সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত মাসিক "রসসাগর" পত্রিকা ( পরে এই পত্রিকার নাম হয় সংবাদ সাগর ) এবং 1856 সালে প্রকাশিত সাপ্তাহিক "বার্তাবহ" পত্রিকা দুইটির সম্পাদনার কাজ দায়িত্বসহকারে পালন করেন । এই কবি 1855 সালে প্রকাশিত "এডুকেশন গেজেট" নামক পত্রিকার সহসম্পাদক নিযুক্ত হন । সেইসময়ে এই পত্রিকাতেই তার কবিতা ও গদ্য উভয় প্রকার রচনাই প্রকাশিত হতো । 1860 সালে প্রেসিডেন্সি কলেজে কিছুদিন শিক্ষকতা করার পর রঙ্গলাল আয়কর অ্যাসেসর ও ডেপুটি কালেক্টর পদে নিযুক্ত হন । তারপরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদে উন্নীত হয়ে সুনামের সাথে চাকরি করেন এবং 1884 সালের এপ্রিল মাসের 11 তারিখে এই বরণীয় কবি চাকুরিজীবন থেকে অবসর গ্রহন করেন ।রঙ্গলাল বাংলা, ইংরাজী, সংস্কৃত ও উড়িয়া ভাষায় খুবই দক্ষ ছিলেন । কর্মসুত্রে তিনি উড়িষ্যার কটকে থাকাকালীন "উৎকল দর্পণ " নামে উড়িয়া ভাষায় সংবাদপত্র প্রকাশ করেন এবং এই পত্রিকায় উড়িষ্যার প্রত্নতত্ত্ব ও উড়িয়া ভাষা সমন্ধে অনেক গবেষনাধর্মী প্রবন্ধ লেখেন । বাংলা সাহিত্যে রঙ্গলালের প্রধান কীর্তি হল টডের "অ্যানালস্ অ্যান্ড অ্যান্টিকুয়িটিজ অফ রাজস্থান" নামক ইংরাজী কাব্য অনুসরনে "পদ্মিনী উপাখ্যান" নামক আধুনিক বাংলা ঐতিহাসিক, রোমান্সধর্মী ও দেশপ্রেম ভাবধারায় রচিত একটি কাব্যগ্রন্থ । এই কাব্যগ্রন্থটি 1858 সালে প্রকাশিত হয় । উপরে উল্লিখিত কবিতাটি একসময় দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিপুলভাবে দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ করেছিল । "পদ্মিনী উপাখ্যান "ছাড়াও এই দেশবরেণ্য কবি 1862 সালে "কর্মদেবী", 1868 সালে "শূরসুন্দরী" এবং 1879 সালে "কাঞ্চী কাবেরী" নামক কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন । এই প্রথিতযশা কবি 1872 সালে সংস্কৃত থেকে কালিদাসের "কুমারসম্ভব" ও "ঋতুসংহার" নামক কাব্যগ্রন্থগুলির বাংলায় পদ্যানুবাদ করেন । এই মহান কবি "ভেক - মুষিকের যুদ্ধ" নামে হোমারের গ্রিক কাব্যের অনুবাদ করেন । কলকাতার ইতিহাস নিয়ে রচিত এই কবির পুর্ণাঙ্গ গ্রন্থ "কলিকাতা কল্পলতা"। বাংলায় এই ধরনের প্রয়াস সম্ভবত প্রথম । 1882 সালে রঙ্গলাল কবি মুকুন্দরামের "কবিকঙ্কন চণ্ডী" সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন । আজ লেখা শেষ করবো এই বরণীয় কবির রচিত "কর্মদেবী" কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত "হায় কোথা সেইদিন" নামক কবিতার কয়েকটি লাইন দিয়ে --
হায় কোথা সেইদিন ভেবে হয় তনু ক্ষীণ,
এ যে কাল পড়েছে বিষম ।
সত্যের আদর নাই, সত্যহীন সব ঠাঁই,
মিথ্যার প্রভুত্ব পরাক্রম ।।
আর কি সেদিন হবে, একতার সুত্রে সবে,
বদ্ধ রবে মননে বচনে ?
পূজিবে সত্যের মূর্তি, প্রণয় পাইবে স্ফূর্তি,
সুখদ সরল আচরণে ?
কৃতজ্ঞতা - Shining Subir.
নীচে তার রচনার ওপর ক্লিক করলে নির্দিষ্ট বইটি পেতে পারেন।
অ - ঔ | ক - ন | প - ম, শ | স, ষ, র, ল, য, হ, ক্ষ |
---|---|---|---|
একটি আবেদন -
কেউ যদি কোনো বই/ পত্রিকা স্ক্যান করতে / দিতে চান
বা সূচীপত্র ও.সি.আর. করতে চান -
তাহলে নিচের ইমেলে যোগাযোগ করবেন
কেউ যদি কোনো বই/ পত্রিকা স্ক্যান করতে / দিতে চান
বা সূচীপত্র ও.সি.আর. করতে চান -
তাহলে নিচের ইমেলে যোগাযোগ করবেন
babuipakhi819@gmail.com
ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য
ReplyDelete