বাংলা ভাষার সমস্ত লেখক - এক জায়গায় ক্রমানুসারে
ক্ষিতীন্দ্র নারায়ণ ভট্টাচার্য
জন্ম - ১লা ফেব্রুয়ারী, ১৯০৯ মৃত্যু - ৩রা জুন, ১৯৯০
ক্ষিতীন্দ্র নারায়ণ ভট্টাচার্য
জন্ম - ১লা ফেব্রুয়ারী, ১৯০৯ মৃত্যু - ৩রা জুন, ১৯৯০
ছদ্মনাম ঃ রসোধর শর্মা।
শুধুমাত্র কল্পবিজ্ঞানের গল্প লিখে খ্যাতি অর্জন করেছেন। এমন লেখকের সংখ্যা খুবই কম, অত্যন্ত আমাদের দেশে। কারণ বিদেশি সাহিত্যে শুধু কল্পবিজ্ঞানের জন্যই বিখ্যাত হয়ে আছেন এমন লেখক অবশ্যই খুঁজে পাওয়া যাবে। যেমন - প্রথম যুগের এইচ. জি. ওয়েলস বা জুলেভার্ণ, বর্তমানকালে আইজ্যাক অ্যাসিমভ বা আর্থার সি. ক্লার্ক। বাংলা সাহিত্যে ঠিক সে জাতীয় দৃষ্টান্ত নেই, যারা আছেন সেই বিরল দৃষ্টান্তের অন্যতম ক্ষিতীন্দ্র নারায়ণ ভট্টাচার্য।
১লা ফেব্রুয়ারি, ১৯০৯ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রথম কল্পবিজ্ঞান গল্প কাশ্মীরী রহস্য’ প্রকাশিত হয় ১৯৩১ সালে পিতা বিশ্বেশ্বর ভট্টাচার্য প্রতিষ্ঠিত ‘রামধনু’ পত্রিকায়। পরবর্তীতে এই পারিবারিক ছোটোদের পত্রিকা রামধনু দীর্ঘদিন সাফল্যের সঙ্গে সম্পাদকের ভূমিকা পালন করেন।
পেশায় অধ্যাপক, রসায়ন শাস্ত্রের কৃতী ছাত্র ক্ষিতীন্দ্রনারায়ণের বিজ্ঞানের সচিত্র প্রবন্ধ সঙ্কলন ‘বিজ্ঞান-বুড়াে’ ও ‘বিজ্ঞানের জয়যাত্রা’ প্রকাশিত হয় তিরিশের দশকের শুরুতে। তাঁর উল্লেখযােগ্য কল্পবিজ্ঞান গ্রন্থগুলি হল –‘মেঘনাদ’, ‘তুষারলােকের রহস্য’, লুপ্তধন, রোমাঞ্চকর প্রভৃতি। তাঁর গ্রন্থ সংখ্যা পঁচিশেরও বেশী। শিশু সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন তিনি। ছােটদের বিশ্বকোষ’-এর সম্পাদনা কার্য ছাড়া তার উল্লেখযােগ্য একটি গ্রন্থ হল ‘বারাে দীঘির রায়বাড়ী।
সাহিত্যচর্চার স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ১৯৮৭ সালে পান বিদ্যাসাগর পুরস্কার', ১৯৮২ সালে, শিশু সাহিত্য পরিষদের ফটিক স্মৃতি পুরস্কার ১৯৬৫ সালে ভুবনেশ্বরী পদক, পরবর্তীকালে কিশাের জ্ঞান-বিজ্ঞান পুরস্কার পান। লুপ্তধন’ গল্পগ্রন্থের লেখকের প্রয়াণ ঘটে ৩ জুন, ১৯৯০ সালে।
ক্ষিতীন্দ্রনারায়ণের রচনাগুলির মধ্যে আছে ভাগুবাবু ও ফটিকগির রহস্য, কুরুকুয়াভিয়ের মন্ত্রপূত পাহাড়, চৌহান গুম্ফার দেওতা, ফুটোস্কোপ, কঙ্গো বনের রহস্য, মন্দাবতীর জঙ্গলে, টিটিঙ্গি পাহাড়ের দেবতা, রঙ্গিলা পাহাড়ের নীলকুঠি। জ্বলন্ত দ্বীপের কাহিনী, কুষ্টিয়াম নটোবােরিয়াম, কঙ্গো বনের রহস্য প্রভৃতি।
তিনি বিজ্ঞানের এবং কল্পবিজ্ঞানের গল্পের এক নিষ্ঠ সাধক ছিলেন। সাহিত্য সাধনায় বিভিন্ন ধরণের রচনা সৃষ্টি যখন প্রায় নিয়মে পর্যবসিত হয়েছে তখন শুধুমাত্র কল্পবিজ্ঞানের গল্পে নিজেকে আবদ্ধ রাখা কিছুটা সংযমের পরিচয়ও বটে। তাঁর সম্বন্ধে যা গৌরবের কথা তা এই যে যেটুকু খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা তিনি অর্জন করেছেন, রসিক সমাজে যে সাহিত্যিক স্বীকৃতি লাভ করেছেন তা পূর্ণতই তার কল্পবিজ্ঞানের জন্য। এই কারণেই বাংলা কল্পবিজ্ঞানের ধারায় তিনি এক স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব।
No comments:
Post a Comment