বিশেষ ঘোষণা

বিশেষ ঘোষণাঃ কারিগরি কারণ বশতঃ বেশ কিছু বইয়ের লিঙ্ক কাজ করছে না। সেগুলো ধীরে ধীরে ঠিক করে দেওয়ার কাজ চলছে। কিছু বই অপেক্ষাকৃত ভালো করতে গিয়ে একটু সময় লাগছে। ফেসবুক গ্রুপে প্রত্যেক আপডেট জানিয়ে দেওয়া হবে। মাঝে মাঝে নতুন বই দেবার ও চেষ্ট চলছে ।

সতীনাথ ভাদুড়ী

বাংলা ভাষার সমস্ত লেখক এক জায়গায় ক্রমানুসারে 

সতীনাথ ভাদুড়ী
জন্ম - ২৭শে সেপ্টেম্বর, ১৯০৬                                                                 মৃত্যু - ৩০শে মার্চ, ১৯৬৫
পূর্ণিয়া, বিহার, ভারত                                                                                        পূর্ণিয়া, বিহার, ভারত


পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রদত্ত সাহিত্যে রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান "রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার" সর্বপ্রথম লাভ করেন সতীনাথ ভাদুড়ী । 1950 সালে সতীনাথ ভাদুড়ী "জাগরী" নামে একটি সুবিখ্যাত উপন্যাস রচনা করে সর্বপ্রথম "রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার" - এর প্রাপক তালিকায় নিজের নাম সংযোজিত করেন । সতীনাথ ভাদুড়ী ছিলেন মূলত কথাসাহিত্যিক এবং তিনি বাংলার পাঠকসমাজে "চিত্রগুপ্ত" নামে সুপরিচিত ছিলেন । 


এই শ্রদ্ধেয় কথাসাহিত্যিক 1906 সালে সেপ্টেম্বর মাসের 27 তারিখে বর্তমান ভারতবর্ষের অন্তর্গত বিহার প্রদেশে অবস্থিত পুর্ণিয়া শহরে এক বাঙালী পরিবারে ভুমিষ্ঠ হন এবং তার পৈতৃক নিবাস ছিল পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের নদীয়া জেলায় অবস্থিত কৃষ্ণনগরে । এই বরেণ্য কথাসাহিত্যিকের পিতার নাম ইন্দুভূষণ রায়, ইনি পেশায় ছিলেন আইনজীবী এবং মাতার নাম রাজবালা দেবী । 1896 সালে ইন্দুভূষণ রায় জীবিকাসুত্রে পুর্ণিয়া শহরে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য চলে আসেন বলে এই মাননীয় কথাসাহিত্যিক নিজের শিক্ষাজীবন পুর্ণিয়ার জেলা স্কুল থেকে আরম্ভ করেন এবং তিনি এই স্কুল থেকে 1924 সালে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে, পাটনা সায়েন্স কলেজ থেকে 1926 সালে আই. এস. সি., 1928 সালে অর্থনীতিতে বি. এ., 1930 সালে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বিষয়ে এম . এ. এবং 1931 সালে পাটনা আইন কলেজ থেকে বি. এল. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে 1932 সাল থেকে 1939 সাল পর্যন্ত পিতার সহকারী হিসাবে পুর্ণিয়া কোর্টে ওকালতি আরম্ভ করেন । এরপরে এই পূজনীয় কথাসাহিত্যিক দেশকে পরাধীনতার গ্লানি থেকে স্বাধীন করার আন্দোলনে সামিল হওয়ার জন্য ওকালতি ত্যাগ করে একজন সাধারণ কর্মী হিসাবে জাতীয় কংগ্রেস দলে যোগদান করে পুর্ণিয়া জেলা কংগ্রেসে সম্পাদকের পদ লাভ করেন । 1939 সাল থেকে 1948 সাল পর্যন্ত ছিল সতীনাথ ভাদুড়ীর রাজনৈতিক জীবনের আয়ুষ্কাল । দীর্ঘ নয় বছরের রাজনৈতিক জীবনের মধ্যে এই সম্মাননীয় কথাসাহিত্যিক 1940 সাল থেকে 1942 সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক বন্দী হিসাবে ভাগলপুর জেলে আটক থাকেন এবং 1942 সালে জেল থেকে মুক্তি লাভ করার পর তিনি পুর্ণিয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন গ্রামে গমন করে নানাবিধ সমাজকল্যানমূলক কাজে আত্মনিয়োগ করেন । এরপরে এই কল্যানবর কথাসাহিত্যিক দ্বিতীয়বার রাজনৈতিক বন্দী হিসাবে 1942 সাল থেকে 1944 সাল পর্যন্ত পাটনা জেলে আটক থাকেন । দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে 1948 সালে জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃবর্গের সাথে দলের কর্মপদ্ধতি নিয়ে মতপার্থক্য হলে এই মহান কথাসাহিত্যিক জাতীয় কংগ্রেস দল ত্যাগ করে সমাজতান্ত্রিক দলে যোগদান করেন । এই স্বনামধন্য কথাসাহিত্যিক 1949 সালে প্যারিস শহরে গমন করেন কিন্তু ছাড়পত্রের অভাবে স্পেন ও রাশিয়াতে গমন করতে ব্যর্থ হন এবং 1950 সালে তিনি দেশে প্রত্যাবর্তন করে পুরোপুরিভাবে সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন । এই দেশপ্রিয় আমৃত্যু পর্যন্ত সাহিত্যচর্চা করে গেছেন । এই খ্যাতনামা কথাসাহিত্যিক গল্প রচনার মধ্যে দিয়ে বাংলার সাহিত্য প্রাঙ্গনে প্রবেশ করেন এবং তার রচিত প্রথম গ্রন্থ "জামাইবাবু" 1931 সালে "বিচিত্রা" পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । 


এই প্রথিতযশা কথাসাহিত্যিক দ্বিতীয়বার জেলে থাকাকালীন 1942 সালে আগস্ট আন্দোলনের পটভুমিকে বিষয় নির্বাচন করে "জাগরী" নামে নিজের প্রথম উপন্যাস রচনা করে " শ্রেষ্ঠ " কথাসাহিত্যিকের শিরোপা লাভ করেন । এই উপন্যাসটি 1946 সালে একটি হিন্দি দৈনিকে প্রকাশিত হলে পাঠকমহলে আলোড়নের সৃষ্টি হয় এবং কথাসাহিত্যিকের নাম "রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার" - এর জন্য মনোনীত হয় । অন্নদাশঙ্কর রায়ের স্ত্রী লীলা রায় "Vigil" নাম দিয়ে "জাগরী" উপন্যাসটিকে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করে ইউনেস্কোর তরফ থেকে প্রকাশের ব্যবস্থা করেছিলেন । "Vigil" গ্রন্থটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে । এই শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক দুই খণ্ডে " ঢোঁড়াইচরিত্র মানস "(1949 ও 1951) রচনা করে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন । এই জনপ্রিয় উপন্যাসটি সেইসময় "দেশ" পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় । এই আদরণীয় কথাসাহিত্যিক কয়েকটি গল্পগ্রন্থ রচনা করেন , তার মধ্যে -- গণনায়ক (1948), চিত্রগুপ্তের ফাইল (1949), অচিনরাগিনী (1954), অপরিচিতা (1954), চকাচকি (1956), সংকট (1957), জলভ্রমি (1962), আলোকদৃষ্টি (1964), দিকভ্রান্ত (1966) প্রভৃতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । এই জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক প্যারিস ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে 1951 সালে "সত্যিই ভ্রমণকাহিনী" নামে একটি ভ্রমণকাহিনী রচনা করেন । এই প্রতিভাধর কথাসাহিত্যিক দেশি-বিদেশি অনেক ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন । 

এই বিদ্বান কথাসাহিত্যিক বিহারের মনুষ্যগণের বৈচিত্রময় জীবনযাত্রা নিজের গল্প ও উপন্যাসে সরল ভাষায় সুনিপুনভাবে চিত্রায়িত করেছেন । ভাষার সরলতা, অভিজ্ঞতার বৈচিত্র্য ও সুক্ষ্ম পর্যবেক্ষণশীলতা, মানবজীবন সমন্ধে অন্তর্দৃষ্টি এই আদর্শবান কথাসাহিত্যিককে স্বতন্ত্রতা প্রদান করেছে । 1965 সালে মার্চ মাসের 30 তারিখে পুর্ণিয়া শহরে এই চিরস্মরণীয় কথাসাহিত্যিকের তিরোধান হয় । বিখ্যাত সাহিত্যিক ফণীশ্বরনাথ রেণু এই মহামান্য কথাসাহিত্যিকের জীবনীমূলক স্মৃতিকথা "ভাদুড়ীজি" রচনা করেন, যা হিন্দি সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হিসাবে বিবেচিত হয় ।

কৃতজ্ঞতা - Shining Subir.

নীচে তার রচনার ওপর ক্লিক করলে নির্দিষ্ট বইটি পেতে পারেন।

অ - ঔ ক - ন প - ম, শ স, ষ, র, ল, য, হ, ক্ষ

















































































































একটি আবেদন - 
কেউ যদি কোনো বই/ পত্রিকা স্ক্যান করতে / দিতে চান 
বা সূচীপত্র ও.সি.আর. করতে চান - 
তাহলে নিচের ইমেলে যোগাযোগ করবেন 

babuipakhi819@gmail.com 

1 comment: